ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মনছবি- স্বপ্ন নিয়ে যাবে শূন্য থেকে পূর্ণতায় 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৩, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

শতাব্দী প্রাচীন বট গাছের দিকে তাকান, দেখবেন এর ডাল-পালা-কাণ্ড-মূল আপনাকে মোহিত করছে। কিন্তু যে বীজ থেকে এই মহীরুহ সৃষ্টি হয়েছে, তার কথা একবার ভাবুন। একটি বট গাছের ফল কাকের পেটে গিয়ে বিষ্ঠা আকারে বীজটি মাটিতে পতিত হয়েছিল। দিন মাস বছর পার হয়ে ছোট বীজটিই দিগন্ত আচ্ছন্নকারী শতাব্দীর মহীরুহে পরিণত হয়েছে।

আসলে জন্মগ্রহণ করেই কেউ সফল হয় না, সিঁড়ি বেয়েই একজন ধাপে ধাপে এগিয়ে যায় সাফল্যের শীর্ষে। নতুন বাস্তবতার আগে সবসময় প্রয়োজন বদলের স্বপ্ন বা মনছবি। স্বপ্নের সাথে বিশ্বাস, মেধা, শ্রম যুক্ত হয়েই সাফল্য আসে। মনছবি শুরু হয় শূন্য থেকে, শেষ হয় পূর্ণতায়।

মনছবির শক্তিরহস্য 
কল্পনার মাধ্যমেই আমরা ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করি এবং জীবনধারা বদলাই। মনছবি ভোজবাজি বা জাদু নয়। অলৌকিক বা ফ্যান্টাসিও নয়, মস্তিষ্কের স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি। সাফল্যের অনুভূতি নিয়েই মানুষ সফলভাবে কাজ করতে শেখে। কল্পনায় নিজেকে সফল ভাবলে, সাফল্যের ছবি দেখলে, সাফল্যের অটোসাজেশন দিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাস্তবেও সাফল্য আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। 

লক্ষ্যের ছবি যখন মনে গেঁথে যায় তখন মস্তিষ্কের কর্মকাঠামোই বদলে যায়। আপনার মনোদৈহিক প্রক্রিয়া তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ভবিষ্যৎ নির্মাণের কাজে লেগে যায়। কীভাবে আঁকবেন? সাফল্যের নীলনকশা ‘মনছবি’ আঁকতে হবে প্রশান্ত মনের স্থির পর্দায়। শিথিল অবস্থায় বা শুধু নিজস্ব চিন্তার মাঝেই নিমগ্ন থাকলে মনছবি দেখুন। কল্পনায় লক্ষ্যস্থলে চলে যান। দর্শক নয়, মনছবির নায়ক-নায়িকা হিসেবে খুঁটিনাটি বিষয়সহ নিজেকে দেখুন। আপনি যা হতে চান বা পেতে চান, তা হয়ে গেছেন বা পেয়ে গেছেন অনুভব করুন। যেমন চাকরির মনছবি হতে পারে এরকম—কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে আবেদনপত্র দিয়েছেন। নির্দিষ্ট দিনে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে সব প্রশ্নের সঠিক জবাব দেয়ায় আপনাকেই পছন্দ করেছেন কর্মকর্তারা। কিছুদিন পর এসেছে নিয়োগপত্র। আপনজনেরা অভিনন্দিত করছেন। নির্ধারিত দিনে কাজে যোগদান করে তৃপ্তির সাথে কাজ করছেন আপনি।

মনছবির পঞ্চশর্ত
মনছবি হলো সাফল্যের ভ্রূণ। মাতৃগর্ভে যে প্রক্রিয়ায় ভ্রূণ পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুতে রূপান্তরিত হয়, মনের গর্ভে লালিত হয়ে মনছবিও তেমনি লক্ষ্যের বাস্তবতা প্রসব করে। মনছবির এ প্রক্রিয়ার কার্যকারিতার জন্যে রয়েছে পঞ্চশর্ত।

১. লক্ষ্য স্থির লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট করুন। আন্তরিকভাবে স্থির করুন কী হতে পারলে, কী করতে পারলে আপনি সবচেয়ে সুখী হতেন। কী কী করার যোগ্যতা আছে আপনার। যা হতে চান তা ‘হলে ভালো হয়’ নয়; বরং লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এভাবে—‘আমি .... হবো’। 

২. লক্ষ্যে আস্থা যুক্তিসঙ্গত লক্ষ্য স্থির হলেই আস্থা আসবে। এ আস্থা হতে হবে শতভাগ। 

৩. লক্ষ্যানুরণন লক্ষ্য অর্জিত হলে আপনার মনে আনন্দের যে অনুরণন হতো তা অনুভব করুন। আকাঙ্ক্ষা যত তীব্র হবে মনছবির বাস্তবায়ন তত স্বতঃস্ফূর্ত হবে। 

৪. লক্ষ্যে একাত্মতা মনছবির সাথে সার্বক্ষণিক একাত্ম থাকুন। শয়নে-স্বপনে আহারে-বিহারে দিনে-রাতে সবসময় সবকিছুর মাঝে মনছবিকে নিয়ে আসুন। পঞ্চ ইন্দ্রিয়যোগে মনছবি দেখুন, শুনুন, ঘ্রাণ নিন, স্পর্শের শিহরণ অনুভব করুন। অনুভব করুন—প্রতি মুহূর্তে আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন তা পাওয়ার পথে। 

৫. নীরবে কাজ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাস্তবে নীরবে নিরলস কাজ করুন। প্রয়োজনীয় গুণ, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগান। এভাবেই আপনি সাফল্য গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত হবেন।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি